সৌরজগতের গোপন কথা

সৌরজগৎ ও এর উৎপত্তি
************************
সৌরজগৎ এর সৌর বা Solar System এর Sol এর অর্থ সূর্য, যা প্রাচীন রোমান ভাষা থেকে আগত। অর্থাৎ সূর্যকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জগতই হচ্ছে সৌরজগৎ বা সোলার সিস্টেম! কিন্তু অন্য নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এমন জগতকে অবশ্যই সৌরজগৎ বলা হতো না! যেমন পোলারিস নক্ষত্রের অধীনে থাকা গ্রহ, উপগ্রহকে হয়তো বলা হবে Polar System! এটা সিরিয়াস হিসেবে নেয়ার কিছু নেই, মজা করলাম! যাই হোক, আমাদের সৌরজগৎ সূর্য নামের একটি মাঝারী আকারের নক্ষত্র ও এর চারপাশে ঘুরতে থাকা ৮টি গ্রহ, এদের উপগ্রহ, বামন গ্রহ, উল্কা, গ্রহাণু, ধুমকেতু ইত্যাদি নিয়ে গঠিত!

আমরা জানি যে এসবকিছুই সূর্যকে কেন্দ্র করে একে নিয়মিত গতিতে প্রদক্ষিণ করছে, কিন্তু আদিম সভ্যতা ভাবতো পৃথিবী ই সবকিছুর কেন্দ্র ও একে কেন্দ্র করেই অন্যান্য নক্ষত্র, সূর্য ও গ্রহ আবর্তন করছে। আমাদের সৌরজগতে সূর্যই সব শক্তির উৎস। তাপ ও আলোর রুপে শক্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে এটি সৃষ্টির শুরু থেকেই। আমাদের সূর্য অবস্থান করছে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে, আর এটি এই গ্যালাক্সির ২০ হাজার কোটি নক্ষত্রের একটি। সূর্য তাঁর জগৎ নিয়ে প্রদক্ষিণ করছে এই গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে! ব্যাপারটা আজব না?
◆সৌরজগতের উৎপত্তিঃ◆
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●○●●●●●●●●●●
 অধিকাংশ বিজ্ঞানী ও গবেষকের মতে আমাদের সৌরজগতের উৎপত্তি সোলার নেবুলা থেকে। বিশাল গ্যাসের স্তুপ অভিকর্ষের টানে একজায়গায় জড়ো হতে থাকে, পরে কেন্দ্রে উৎপন্ন হয় সূর্যের আদি গঠন। এই আদি সূর্যকে ঘিরে চারপাশের বাড়তি গ্যাসগুলো ঘুরতে ঘুরতে চাকতির মতো একটা আকার ধারণ করে। পরে এই গ্যাসীয় চাকতির অধিকাংশ গ্যাসীয় উপাদানই সূর্য নিজের দিকে টেনে নেয়, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় কিছু গ্যাস আবার ঘনীভূত হয়ে গ্রহ কণা গঠন করে। সব গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণু আর ধূমকেতুকে একত্রে গ্রহ কণা বা প্ল্যানেটেসিমাল বলে! সূর্য যখন পুরোপুরি সুগঠিত হয়ে পড়ে ও ফিউশন প্রক্রিয়ায় জ্বলতে শুরু করে, তখন সৌরবায়ুর প্রভাবে আশেপাশের অতিরিক্ত হালকা গ্যাস তথা হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ইত্যাদি উড়ে চলে যায়। আর সূর্যের কাছাকাছি থাকা গ্রহগুলোর ওপর থেকে এসব গ্যাসের আস্তরণও সরে যায়। এ কারণে সূর্যের কাছাকাছি থাকা ৪টি গ্রহ কঠিন। এদের স্থলজ গ্রহ বলে। কিন্তু মঙ্গলের পর থেকে বাকি গ্রহগুলোতে সৌরবায়ুর প্রভাব কম থাকায় সেগুলো গ্যাসীয় দানব হিসেবে রয়ে যায় আমাদের সৌরজগতে!
 
◆সৌরজগৎ আবিস্কারঃ ◆

সৌরজগৎ তো শুরু থেকেই ছিল, তাহলে এর আবিস্কারের আবার কি আছে? হ্যাঁ, আগে থেকেই ছিল। কিন্তু তখন একে পর্যবেক্ষণ করার মতো দরকারি উপকরণ ছিল না আমাদের, আর তাই মানুষ বুঝত না নক্ষত্র আর গ্রহের পার্থক্য! শতশত বছর ধরেই মানুষ ছোটছোট আলোর বিন্দুকে রাতের আকাশে নক্ষত্রের মাঝে ঘুরে বেড়াতে দেখত! প্রাচীন গ্রীকরা এর নাম দিয়েছিল Planets, যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় “ভ্রমণকারী”। প্রাচীন মানুষ বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি এর খবর জানতো। পরে টেলিস্কোপ আবিস্কারের পর গ্রহাণুপুঞ্জ, ইউরেনাস, নেপচুন ও প্লুটোর কথা জানতে পারে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্লুটো আমাদের সৌরজগতের গ্রহ হিসেবে পরিচিত ছিল, পরে একে বামন গ্রহ হিসেবে পদবনতি দেয়া হয়। কুইপার বেল্ট এ এখন পর্যন্ত এরকম কয়েকশ বামন গ্রহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে আমাদের সৌরজগতে!

সৌরজগতের উপাদানঃ◆ 

আমাদের সৌরজগতের মূল ও প্রধান উপাদান হচ্ছে সূর্য। মোট সৌরজগতের ৯৯.৮% ভর সূর্যের একাই বহন করে। বাকি ০.২% মিলে অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদি! সূর্যের কাছে থেকে দূরে সাজালে ক্রমানুসারে ৮টি গ্রহ হচ্ছে, বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। ইংরেজিতে যাদের নাম Mercury, Venus, Earth, Mars, Jupiter, Saturn, Uranus ও Neptune. পৃথিবী বাদে সবগুলোই রোমান দেবতা ও দেবীর নামানুসারে রাখা হয়েছে। মানে মিথোলজি আর অ্যাস্ট্রোনমি একে অপরের সাথে দারুণ ভাবে জড়িত! অধিকাংশ গ্রহের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে এদের এক বা একাধিক উপগ্রহ! পরের পর্বে সব গ্রহ নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝে বড় একটি জায়গা জুড়ে গ্রহাণুপুঞ্জ রয়েছে। গ্রহাণু হচ্ছে গ্রহের তুলনায় অনেক ছোট অনিয়মিত আকারের পাথরের চাঁই। এরা অনেক ছোট থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার বড় ও হতে পারে। সৌরজগতের আরেকটি উপাদান ধুমকেতু হচ্ছে বরফ ও পাথরের বিশাল পিণ্ড! সূর্যের কাছাকাছি এলে এর কেন্দ্রে থাকা বরফ গলে গ্যাসে পরিণত হতে থাকে, আর তা সৌর বায়ুর প্রভাবে সূর্যের বিপরীতে উড়ে যেতে থাকে। তখন ছুটে চলার সময় মনে হয় এর পেছনে লেজ গজিয়েছে!



★কিছু তথ্য★

♦  সৌরজগতে রয়েছে আটটি গ্রহ। সূর্য থেকে দূরত্বের ক্রমানুসারে এগুলো হলো—বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন।

♦  সূর্য একটি নক্ষত্র। একটি বড় গরম গ্যাসের বলের মতো। এতে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস থাকে। এই গ্যাসগুলোর সংঘর্ষে তাপ ও আলো তৈরি হয়, যা আমাদের পৃথিবীতে আলো ও তাপ দেয়।

◆সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ। এর কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুন।

♦  সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি এবং সবচেয়ে ছোট হলো বুধ।

♦  একমাত্র পৃথিবীতেই প্রাণীর বাস করার উপযোগী পরিবেশ আছে। আর কোথাও এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

♦  পৃথিবী নিজের পথে অর্থাৎ নিজের কক্ষপথে নিজে ঘুরতে পারে। আবার একই সঙ্গে সূর্যের চারদিকেও ঘোরে। পৃথিবীর নিজের কক্ষে একবার ঘুরতে লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। আর একেই আমরা বলি এক দিন। আবার সূর্যকে পুরো একবার ঘুরতে সময় লাগে ৩৬৫ দিন। একে আমরা এক বছর বলি।

♦  আমরা যে শক্তিটার কারণে পৃথিবীর ওপর বাস করতে পারি, হাঁটতে পারি এবং আমরা ছিটকে পড়ে যাই না তা হলো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি। আর এ শক্তির জন্যই পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ সূর্যের চারদিকে ঘুরতে পারছে।

♦  সৌরজগতে কিছু ছোটখাটো বাসিন্দা আছে, যারা আবার গ্রহকে ঘিরে ঘোরে। যেমন— আমাদের পরিচিত চাঁদ মামা। ওটা পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে। চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। অপ্রাকৃতিক উপগ্রহ আবার কোনটা? আমরা যেসব স্যাটেলাইট পাঠাই আকাশে, সেগুলোই কৃত্রিম উপগ্রহ।

♦  চাঁদের গায়ে সূর্যের আলো পড়ে বলেই আমরা চাঁদকে দেখতে পাই।

♦  পৃথিবীকে একবার ঘুরে আসতে চাঁদের সময় লাগে ২৭ দিন ৮ ঘণ্টা।

♦  সূর্য থেকে পৃথিবী প্রায় ১৫ কোটি ১৪ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড।

♦  পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে দিন ও রাত্রি হয় এবং বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন হয় ।

♦  মঙ্গল দেখতে লাল বলে একে লাল গ্রহও বলা হয়। এ গ্রহের পাথরগুলোকে লাল দেখায়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের গ্রহ।

শনি দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ গ্রহ। এর চারদিকে রয়েছে পাথরের বরফ ও ধুলার বেল্ট। এ গ্রহটিও গ্যাসের তৈরি।

♦  আমাদের পৃথিবীর মাত্র একটা উপগ্রহ চাঁদ। কিন্তু বৃহস্পতির আছে ৭৯টি উপগ্রহ। শনির আছে ৮২টি।

 

গ্রহের ইংরেজি নাম

বুধ = মারকারি, শুক্র = ভেনাস, পৃথিবী = আর্থ, মঙ্গল = মার্স, বৃহস্পতি = জুপিটার, শনি = স্যাটার্ন। ইউরেনাস ও নেপচুনের বাংলা নাম নেই।

 

★ এককথায় উত্তর★

■সৌরজগতে কয়টি গ্রহ আছে?

◆উত্তর : আটটি।

■সূর্যে কী কী গ্যাস থাকে?

◆উত্তর : হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন।

■গ্রহ কার কাছ থেকে আলো ও তাপ নেয়?

◆উত্তর : সূর্য থেকে।

■শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা কোন গ্রহ?

◆উত্তর : শুক্র গ্রহ।

■কত দিন পর পর অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হয়?

◆উত্তর :  ৩০ দিন পর পর।(দুটো অমাবস্যা বা পূর্ণিমার মধ্যবর্তী সময়)

■কত বছর পর পর হ্যালির ধূমকেতু দেখা যায়?

◆উত্তর : ৭৫ বছর পর পর।

■পৃথিবীর কয় ভাগ পানি ও কয় ভাগ স্থল?

◆উত্তর : তিন ভাগ পানি ও এক ভাগ স্থল।

■পৃথিবী ঘুরতে থাকলেও আমরা ছিটকে পড়ে যাই না কেন?

◆উত্তর : অভিকর্ষ বলের কারণে।

■পৃথিবী নিজ অবস্থানে ঘোরার গতিকে কী বলে?

◆উত্তর :আহ্নিক গতি।

■সবচেয়ে দিন বড় ও রাত ছোট কত তারিখে?

◆উত্তর : ২১ জুন।

 
★সৌর জগতের জানা অজানা তথ্য:★

______________________
▶ সৌরজগতে গ্রহ রয়েছে - ৮টি
.
▶ উপগ্রহ রয়েছে- ৪৯টি
.
▶ সূর্য পৃথিবী অপেক্ষা - ১৩ লক্ষ
গুণ বড়
.
▶ সূর্যের উপরিভাগের উষ্ণতা -
৫৭০০০ডিগ্রি
সেলসিয়াস
.
▶ সূর্য নিজ অক্ষের দিকে আবর্তন
করে-
২৫দিনে
.
▶ নিজ গ্যালাক্সির চারপাশে আবর্তন
করতে সূর্যের
সময় লাগে- ২০ কোটি বছর
.
▶ সূর্যকে পরিক্রমণ করতে বুধের সময়
লাগে-৮৮
দিন
.
▶ উপগ্রহ নেই- বুধ ও শুক্র
.
▶ সন্ধ্যাতারা ও শুকতারা হিসেবে
দেখতে পাওয়া যায়-
শুক্রকে
.
▶ পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা-
১৩.৯০ডিগ্রি
সেলসিয়াস
.
▶ আগ্নেয়গিরি রয়েছে- মঙ্গল গ্রহে
.
▶ মঙ্গলের উপগ্রহ- দুইটি, ডিমোস
ওফেবোস
.
▶ লালচে গ্রহ বলা হয়- মঙ্গল গ্রহকে
.
▶ গ্রহাণু - ৮০৫ থেকে ১.৬
কিলোমিটার ব্যাস
সম্পন্ন গ্রহ
.
▶ অসংখ্য গ্রহাণুপুঞ্জ রয়েছে- মঙ্গল
বৃহস্পতিরর মাঝখানে
.
▶ একদিনে দুইবার সূর্য উঠে ও অস্ত
যায়- বৃহস্পতি
গ্রহে
.
▶ বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ - ১৬টি
.
▶ সৌরজগতের ২য় বৃহত্তম গ্রহ- শনি
.
▶ শনির উপগ্রহ- ২২টি
.
▶ ইউরেনাসের উপগ্রহ- ৫টি
.
▶ সূর্য থেকে অধিক দূরত্বে অবস্থিত-
নেপচুন
.
▶ নীলাভ গ্রহ - নেপচুন
.
▶ নেপচুন এর উপগ্রহ- ২টি collected

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর


■ক) হ্যালির ধুমকেতু আবার কবে দেখা যাবে মনে করা হয়?

◆উত্তর : ২০৬২ সালে।

সৌরজগৎ নিয়ে অজানা কিছু তথ্য-

সূর্যকে ঘিরে গ্রহ, উপগ্রহ , ধুমকেতু , উল্কা ,গ্রহাণু নিয়ে যে জগত তাকেই আমরা সৌরজগৎ বলি। কিন্তু আমাদের এই আবাসস্থল সমন্ধে আমরা কতটুকুই বা জানি। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য আবিস্কার করছে বিজ্ঞনিরা। সেই রকম কিছু জানা-অজানা তথ্য জনাবো আপনাদের।

◆“সবুজ গ্রহ” বলা হয়ঃ
◆ ইউরেনাস-কে।
◆ সৌরজগত এর দ্রুততম গ্রহঃ বুধ
◆ “গ্রহ রাজ” বলা হয়ঃ বৃহষ্পতি-কে।
◆ যে গ্রহের উপগ্রহ সবচেয়ে বেশিঃ শনি (৫৩ টি)
◆শতাব্দীর সবচেয়ে উজ্জ্বল ধুমকেতুঃ হেল-বপ
◆ “পৃথিবীর জমজ” নামে পরিচিতঃ শুক্র
◆ পৃথিবীর নিকটতম গ্রহঃ শুক্র
◆সূর্যের তৃতীয় নিকটতম গ্রহঃ পৃথিবী
◆ সৌরজগত আবিষ্কার করেনঃ নিকোলাস কোপারনিকাস।
◆ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ
◆ ‘শান্ত সাগর’ অবস্থিত -চাঁদে।
◆সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র -প্রক্রিমা সেন্টারাই।
◆পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব -৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কি.মি.।
◆পৃথিবী থেকে সূর্যের দুরত্ব-১৪ কোটি ৮৮ লক্ষ কি.মি. (প্রায়)।
◆সৌরজগতের উপগ্রহ নেই -বুধ ও শুক্র।
◆ সূর্যের ভর -প্রায় 1.99 × 10¹³ কিলোগ্রাম।
◆সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয় -২১ জুন।
◆উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় ও রাত্রি সবচেয়ে ছোট থাকে -২১ জুন।
◆পৃথিবীতে দিবারাতি সমান থাকে -২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর।
◆সর্বপ্রথম হ্যালির ধুমকেতু দেখা যায় -১৭৫৯ সালে।
◆ হ্যালির ধুমকেতু দেখা যায় ৭৬ বছর পর পর।


 

■খ) কখন আমরা আকাশে উল্কা দেখতে পাই?

◆উত্তর : সূর্যের চারপাশে ঘুরছে অনেক ছোটখাটো বস্তু ও গ্রহাণু। এগুলোর মধ্যে ছোট আকারের বস্তুগুলোকে বলে উল্কা। এরা পাথর, গ্যাস, বরফ ও ধূলিকণা দিয়ে তৈরি হতে পারে। তাপের সংস্পর্শে এরা গ্যাসে পরিণত হয়। এরা যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন পুড়ে যায়। পুড়ে যাওয়ার সময় ছাই হয়ে এরা আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন পৃথিবী থেকে দেখতে আগুনের গোলার মতো মনে হয়। এভাবে অনেক উল্কা যখন একসঙ্গে পড়তে থাকে তখন তাকে উল্কা বৃষ্টি বলে।

 

■গ) কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক উপগ্রহ কাকে বলে?

◆উত্তর : সৌরজগতে সূর্যকে ঘিরে ঘুরছে আটটি গ্রহ। আবার এই গ্রহগুলোকে ঘিরে ঘুরছে কতগুলো ছোট উপগ্রহ। এগুলো আকারে গ্রহ থেকে বেশ ছোট। এরা নিজেরা তাপ ও আলো তৈরি করতে পারে না। যেমন—চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। চাঁদকে আমরা আলোকিত দেখি, যখন এর গায়ে সুর্যের আলো পড়ে। চাঁদের ওপর পড়া সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে পড়লে আমরা তাকে জ্যোছনা বলি। অন্য আরো গ্রহেরও উপগ্রহ আছে। এরাই প্রাকৃতিক উপগ্রহ।

আবার মানুষের বানানো কৃত্রিম উপগ্রহও পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর কক্ষপথে মানুষের বানানো প্রায় ২৫০০ উপগ্রহ ঘুরছে। এগুলোর সাহায্যে বেতার ও টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট যোগাযোগ, আবহাওয়ার তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়।

 

পূর্ণিমা ও অমাবস্যা কিভাবে হয়? ব্যাখ্যা করো।

◆উত্তর : পুরো পৃথিবীকে ঘুরতে চাঁদের সময় লাগে ২৭ দিন ৮ ঘণ্টা। আকাশে যখন থালার মতো পূর্ণ চাঁদ থাকে তখন তাকে পূর্ণিমা বলে। এর ঠিক পরপরই চাঁদটি আবার ছোট হতে থাকে। ছোট হতে হতে একদম দেখাই যায় না। ওই অবস্থাকে বলে অমাবস্যা। অমাবস্যার পরের রাতে সরু একফালি চাঁদ ওঠে পশ্চিম আকাশে। প্রতি রাতে এটি বড় হতে থাকে। দুই সপ্তাহ পর আবার থালার মতো গোল চাঁদ ওঠে। এভাবে ৩০ দিন পর পর অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হয়। 

Comments